শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ০৫:৪৪ পূর্বাহ্ন
চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
মায়ানমার রোহিঙ্গা নারীকে জন্ম সনদ প্রদান করার অভিযোগ সত্যতা প্রমানিত হওয়ায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ১১ নং চিওড়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ আবু তাহের কে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
শুক্রবার (০২ এপ্রিল) দুপুরে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন, উপজেলার নির্বাজী কর্মকর্তা মোঃ জামাল হোসেন।
তিনি জানান, ২৯ এপ্রিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের ইউপি-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব তৌহিদ এলাহি স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে এই বহিস্কার আদেশ প্রদান করা হয়।
তৌহিদ এলাহি তার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করেন, চিওড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (নিবন্ধক) মোঃ আবু তাহেরের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গার অনুকূলে জন্ম নিবন্ধন সনদ ইস্যুকরন ও নিজের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড অন্য ব্যক্তির নিকট হস্তান্তর, সচেতনতার অভাব, দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে অবহেলার অভিযোগ তদন্তে প্রমানিত হওয়ায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯- এর ৩৪ (৪) (খ) (ঘ) ধারা অনুযায়ী রেজিস্টার জেনারেল, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে আরো উল্লেখ করা হয়, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহেরের বিরুদ্ধে উল্লেখিত অভিযোগে তার দ্বারা ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষমতা প্রয়োগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমিচন নয় মর্মে সরকার মনে করে।
চেয়ারম্যান আবু তাহের কর্তৃক সংগঠিত অপরাধমূলক কার্যক্রম ইউনিয়ন পরিষদ সহ জনস্বার্থের পরিপন্থী বিবেচনায় স্থানীয় সরকার ইউনিয়ন পরিষদ আইন অনুযায়ী চেয়ারম্যান আবু তাহের কে স্বীয় পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১১ জুন ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ভিয়েতনাম যাওয়ার সময় ইমিগ্রেশন পুলিশ হুমায়রা ও শারিমন আক্তার নামে দুইজনই রোহিঙ্গা নারীকে আটক করে। পরে তাদের বিরুদ্ধে ১৫ জনু কুমিল্লার ডিএসবি’র উপ পরিদর্শন ইমাম হোসেন বাদি হয়ে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরই ২৭ জনু থানা পুলিশ হুমায়রা ও শারমিন আক্তারকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠান।
এর পরই জানা যায় এই দুই রোহিঙ্গা নারী উপজেলার ১১ নং চিওড়া ইউনিয়ন পরিষদের ডিমাতলী গ্রামের মরহুম কাজী শামছুল হকের ছেলে কাজী খবির উদ্দিন এই দুই নারীর পিতা সেজে ঐ ইউনিয়ন থেকে দুইটি জন্ম সনদ তৈরি করে। পরে জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট তৈরি করে ভিয়েতনাম পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করে।
স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, রোহিঙ্গা নারী হুমায়রার পিতা শামসুল আলম জন্ম ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি। আর শারমিনের পিতার নাম নুর কামাল জন্ম ২০০৬ সালের ১ জানুয়ারি। তাদের কতৃত পিতা খবির উদ্দিন এই দুই নারীকে নিজের সন্তান পরিচয় দিয়ে জন্ম সনদগুলো তৈরি করেছে।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান আবু তাহের বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুর ঘটনাটি জন্ম নিবন্ধন শাখার রেজিস্টার জেনারেল আমাকে কারন দর্শানোর নোটিশ করলে আমি তার সঠিক জবাব প্রদান করি। এ ছাড়াও জন্ম সনদ গ্রহীতার কতৃত পিতা কাজী খবির উদ্দিনের বিরুদ্ধে ডিএসবি মামলা দায়ের করেছিলো। সেই মামলায় পুলিশ তাকে অভিযুক্ত করেন আদালতে সার্চ শিট প্রদান করেন।
পুলিশ সার্চ শিটে আমাকে স্বাক্ষী করেন। তারপরও আমাকে স্থানীয় সরকার ইউপি শাখা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
2025 © জনপদ সংবাদ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
প্রয়োজনে যোগাযোগঃ ০১৭১৫-১২৫২৪৩